ভিটামিন ডি-র ঘাটতি ‍বুঝবেন যেভাবে

silviarita

সব ভিটামিনের তুলনায় ভিটামিন ডি একটু আলাদা। অন্য সব ভিটামিন খাবারে নিয়মিত পাওয়া গেলেও ভিটামিন ডি–এর মূল উৎস সূর্যের আলো। খাদ্যে সহজলভ্য নয় বলে অনেকের মধ্যেই এই ভিটামিনের অভাব দেখা যায়। গবেষণামতে, প্রতি চারজনের মধ্যে একজনের শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাব থাকতে পারে।


ভিটামিন ডি অভাবের লক্ষণ


নিদ্রাহীনতা
হাড়ে ব্যথা
প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়া
বিষণ্ণতা

চুল পড়া

ডার্ক সার্কেল


ভিটামিন ডির উপকারিতা

হাড় শক্ত করে:  শরীরে ফসফরাস ও ক্যালসিয়াম শোষণের জন্য প্রয়োজন ভিটামিন ডি। এই ২টি উপাদান হাড়ের মূল গঠন তৈরি করে। ভিটামিন ডির অভাবে হাড় দুর্বল হয় এবং আস্তে আস্তে হাড় ভঙ্গুর হয়ে পড়ে, 

যাকে অস্টিওপরোসিস রোগও বলা হয়।


 বিভিন্ন ধরনের ভিটামিনের মধ্যে ভিটামিন ডি এমন একটি পুষ্টিগুণ, যা খাবার গ্রহণের মাধ্যমে পুরোপুরি আমাদের শরীর তৈরি করতে পারে না। গবেষকরা বলেন, একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির প্রয়োজনের শতকরা ৩০ ভাগ শুধু তৈরি হয় বিভিন্ন ধরনের খাবার গ্রহণ থেকে। বাকি ৭০ ভাগ তৈরির জন্য আমরা পুরোপুরি সূর্যালোকের ওপর নির্ভরশীল। আর এ কারণেই বেশির ভাগ মানুষ ভিটামিন ডি-র অভাবে নানা রোগের শিকার হচ্ছেন।মূলত ভিটামিন ডি হাড়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে, ত্বকের সুস্থতা ধরে রাখতে, এমনকি ক্যানসারের মতো রোগ প্রতিরোধে উপকারী। এটি শরীরের পেশিকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। শরীরে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতেও ভিটামিন ডি কার্যকরী ভূমিকা রাখে। ভিটামিন ডি শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। মানসিক সুস্থতার জন্যও এটি খুবই জরুরি। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এটি ফ্যাট সলিউবল সিকুস্টারয়েড। কাজ হচ্ছে ইনটিসটাইন বা অন্ত্র থেকে ক্যালসিয়াম শোষণ করা। পাশাপাশি এটি আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম ও ফসফরাসকেও দ্রবীভূত করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং শারীরিক অবস্থার উন্নতি ঘটাতে ভিটামিন ডি প্রয়োজন বলে শেষ করা যাবে না। ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি হওয়া মানে হাড় ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়া। এমনটি হওয়া মানেই আর্থাইটিসের মতো রোগ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠা। ভিটামিন ডি হাড়কে শক্তোপোক্ত করার পাশাপাশি হার্ট, ব্রেন এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। হাড় ও দাঁতের সুস্থতার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি উপাদান এই ভিটামিন। এর অভাবে ওজনও বেড়ে যায়।


 যেগুলোর মাধ্যমে বুঝতে পারবেন আপনার শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাব আছে কিনা  জেনে নিন কিছু লক্ষণ সম্পর্কে।


 ভিটামিন ডি-এর অভাবে মাংসপেশীর দুর্বলতা বেড়ে যায়। বিশেষ করে মাংসপেশি বেড়ে যাওয়া এবং মাংসপেশি কাঁপার মতো সমস্যাগুলো হয়ে থাকে। কাজেই মাংসপেশির দুর্বলতা কাটাতে নিয়মিত ভিটামিন ডি খান। 

বিষণ্ণতা বাড়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ভিটামিন ডি। এর ফলে সারাক্ষণ মানসিক চাপ অনুভূত হয়। তখন কোনো কারণ ছাড়াই অতিরিক্ত বিষণ্ণতায় ভুগতে পারেন। এর অভাবে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। ফলে মানুষ এমনি এমনি রেগে যায়।


 ভিটামিন ডি-এর অভাবে হাড়ে সহজেই ফাটল ধরে। এর ফলে একটু পড়ে গেলে কিংবা সামান্য আঘাত পেলেই হাড়ে চির ধরে যায়। অনেক সময় হাড়ে প্রচণ্ড ব্যথা করলেও বুঝবেন আপনার শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাব রয়েছে।

 আপনার দাঁতে সমস্যা যেন লেগেই আছে। শক্ত কোনো কিছুই খেতে পারেন না। তাহলে বুঝবেন আপনার শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাব রয়েছে।

ভিটামিন ডি-এর অভাবে দাঁত ক্ষয়ে যাওয়ার পাশাপাশি ভেঙেও যায়। ভিটামিন ডি-এর অভাবে উচ্চরক্তচাপের মাত্রা আরও বেড়ে যেতে পারে। কাজেই সময় থাকতে আগে থেকেই সচেতন হোন এবং ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খান।

 ভিটামিন ডি-এর অভাবে সহজেই অনেক ক্লান্তি নেমে আসে। ফলে ঘুম পায়। কর্মক্ষেত্রে আরও কর্মঠ কর্মী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলে নিজের শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাব পূরণ করুন। ভিটামিন ডি-এর অভাব যে কোনো মানুষের মেজাজ-মর্জিতে প্রভাব ফেলে। এ সময় মনের মধ্যে চাপা একটা অশান্তি কাজ করে। ফলে সবসময় মেজাজ রুক্ষ থাকে। কেউ ভালো কথা বললেও প্রচণ্ড রাগ হয়। তাই কারও সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হওয়ার আগেই শরীরে ভিটামিন ডি-এর চাহিদা পূরণ করে ফেলুন।


 অষ্টিওপরোসিস, 

বিষণ্ণতা,

 জরায়ু ক্যান্সার,

 স্তন ক্যান্সার 

এমনকি ডায়বেটিস এবং মেদ বৃদ্ধি প্রতিরোধে

 ভিটামিন ডি’র ভূমিকা আছে।


 অনেকেই আছেন যারা নিজেরাও জানেন না তারা ভিটামিন ডি-এর অভাবে ভুগছেন। কাজেই আপনি যদি নিজের মধ্যে উপরোক্ত লক্ষণগুলো বুঝতে পারেন তাহলে এর মাত্রা জানতে সঙ্গে সঙ্গে শরীর চেকআপ করে নিন। সূর্যের আলো ভিটামিন ডি-এর অন্যতম উৎস। সূর্যের কড়া আলোতে না গিয়ে হালকা রোদ গায়ে লাগান। ভিটামিন ডি-এর অভাব পূরণের জন্য হালকা রোদে সামান্য ব্যায়ামও করতে পারেন। সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত রোদ সবচেয়ে ভালো। এই সময় সূর্যের যে আলো আসে, সেটি ভালো। কেবল শীতকাল নয়, সব ঋতুতেই যদি আমরা কিছুক্ষণ রোদে বসি, পাঁচ মিনিট থেকে আধা ঘণ্টা পর্যন্ত সপ্তাহে দুবার, তাহলে উপকৃত হওয়া যায়।


 চিজ : ভিটামিন ডি শরীরে তৈরি করতে গেলে চিজ খান। চিজ খেলে শরীরে ক্যালসিয়ামের মাত্রা বাড়ে। 
 দুধ খাওয়া জরুরি : মাশরুমের মতো দুধেও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি রয়েছে। তাই শরীরের ভিটামিন ডি-এর যোগান বৃদ্ধি করার জন্য দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার খাওয়া জরুরি।


  ডিম : শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি মেটাতে চাইলে রোজের ডায়েটে একটা করে ডিম থাকা জরুরি। নিউট্রিশনিস্টদের মতে ডিমের ভেতরে প্রোটিন এবং উপকারি কোলেস্টেরলের পাশাপাশি ভিটামিন ডি-ও রয়েছে। তাই শরীরকে কর্মক্ষ রাখতে এবং  নানাবিধ রোগ দূর করতে রোজ  দুটো ,একটা  ডিম খাওয়া উচিত।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ